৯ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৪শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার, সন্ধ্যা ৭:৪৫

নবীগঞ্জ ঘাটের পাবলিক টয়লেট বন্ধ, ভোগান্তি চরমে

প্রাইমনারায়ণগঞ্জ.কম

দেশের অন্যতম নগরী হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন। তারপরও নগরীর অন্যতম সমস্যা গণশৌচাগার সমাধানে হিমশিম খেতে হচ্ছে নাসিক কর্তৃপক্ষকে। নগরীতে এমনিতেই প্রয়োজনের তুলনায় নেই পর্যাপ্ত গণশৌচাগার। তার উপর বছর খানেক ধরে বন্ধ রয়েছে ১১ নং ওয়ার্ডের হাজীগঞ্জ-নবীগঞ্জ গুদারা ঘাটের গণশৌচাগারটিও। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে জনসাধারণকে।

স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনে টয়লেট প্রতিটি মানুষের জন্যই অপরিহার্য। এ পাবলিক টয়লেটটি বন্ধ থাকায় এ রুটে চলাচলকারী লোকজনকে প্রাকৃতিক প্রয়োজন মেটাতে চরম বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। বাধ্য হয়ে অনেকে সড়ক ও ঘাটের আশেপাশে মলমূত্র ত্যাগ করে। এতে নষ্ট হচ্ছে সিটি এলাকার পরিবেশ। ফলে, এখান দিয়ে সাধারণ মানুষ চলাচলের সময় চরম বিপত্তিতে পড়ে। মূত্রের প্রকট দুর্গন্ধে নাকে রুমাল চেপে চলাচল করতে হয়।

জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১১ নং ওয়ার্ডের হাজীগঞ্জ-নবীগঞ্জ গুদারা ঘাট দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার লোক যাতায়াত করে, নদী পারাপার হয়ে থাকে। ব্যস্ততম এ ঘাটের সামনের দিকে কয়েক বছর আগে পাবলিক টয়লেট নির্মিত হলেও বছর খানেক যাবত এটি বন্ধ রয়েছে।

অন্যদিকে হাজীগঞ্জ, পাঠানটুলি, ২ নম্বর ঢাকেশ্বরী ও আশেপাশের এলাকায় বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানা তথা গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ গার্মেন্টসগুলোতে হাজার হাজার শ্রমিকরা কাজ করে যাদের বেশীর ভাগই এম সার্কাস, হাজীগঞ্জ, নবীগঞ্জে বসবাস করে। এসব শ্রমিকরা প্রতিদিন গুদারা ঘাটের সড়ক দিয়ে চলাচল করে, অনেকে নদীর ওপর থেকে এপারে আসে এবং কাজ শেষে বাড়ী ফিরে যায়। যাদের অধিকাংশই নারী শ্রমিক। এ স্থানের পাবলিক টয়লেটটি বন্ধ থাকায় নারী শ্রমিকদের ভোগান্তি চরমে পৌছেছে।

এছাড়াও চিকিৎসা, কেনাকাটাসহ বিভিন্ন চাহিদা পূরণে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ নদীর ওপার তথা নবীগঞ্জ ঘাট দিয়ে হাজীগঞ্জে এসে নিজ নিজ গন্তব্যে যায়। পাবলিক টয়লেটটি বন্ধ থাকায় বয়:বৃদ্ধ, শিশু, নারীসহ অনেক পুরুষদেরও সমস্যায় পড়তে হয়। উপায়ন্তর না পেয়ে পুরুষরা ঘাটের আশেপাশে তাদের মূত্র (প্রসাবের) ত্যাগের প্রয়োজন মেটালেও নারীরা পড়ে চরম বিপাকে। ফলে অনেক নারীকেই ব্যক্তিগত এই প্রয়োজনকে চেপে রেখে বহুক্ষণ তাদের ঘরের বাইরে থাকতে হচ্ছে, যা তাদের কাজ এবং শরীর দুটোতেই নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাজীগঞ্জ-নবীগঞ্জ ফেরীঘাটের শুরুর দিকেই রয়েছে একটি পাবলিক টয়লেট। টয়লেটটি দেখেই বোঝা যাচ্ছে এটি অনেকদিন যাবতই বন্ধ রয়েছে। আশেপাশের মানুষ ও নদী পারাপার হওয়া যাত্রীদের সাথে কথা বললে তারা তাদের ভোগান্তির কথা জানায়।

শ্রাবন্তি নামে এক নারী বলেন, এতো ব্যস্ত একটি ঘাট এটি। তারপরও প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার জন্য কোনো গণশৌচাগার ব্যবস্থা নেই। যেটি আছে সেটিও বন্ধ। যা সত্যিই বেমানান। প্রাকৃতিক ডাক যা মুহুর্তের মধ্যেই সেরে ফেলতে হয় এ ব্যবস্থার উন্নতি হওয়া দরকার।

সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর জমশের আলী ঝন্টু বলেন, এ পাবলিক টয়লেট টি ইজারা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু যারা পাবলিক টয়লেটটি ব্যবহার করে তারা ইজারাদারকে ঠিকভাবে পয়সা-পাতি দেয় না। তাই তিনি ছেড়ে দিয়েছে। অন্য কেউ ইজারা নেয়ও না। তারপরও আমরা ঈদের পরেই এ পাবলিক টয়লেটটি চালু করে দিবো।

জানতে যোগাযোগ করা হলে সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুল আমিন ও নগর পরিকল্পনাবিদ মো. মঈনুল ইসলাম কল রিসিভ করেন নি।

সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আজগর বলেন, ইজারা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু যে ইজারা নিয়েছিলো তার লোকশান হয় বিধায় সে ছেড়ে দিয়েছে।

সিটি কর্পোরেশনের বাজার কর্মকর্তা জহিরুল ইসলামও একই সুরে বলেন, লোকশান হওয়ায় ইজারাদার আর চালায় নি। তাছাড়া বার বার দরপত্র আহবান করলেও কেউ নিতে চায় না। তবে আমরা ঈদের পরে একটা ব্যবস্থা করবো। যদি কেউ না নেয় তবে আমরা আমাদের স্বাস্থ্য বিভাগের মাধ্যমে এটি চালু করবো।

এতোদিন স্বাস্থ্যবিভাগের মাধ্যমে কেন চালু করেন নি এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেন নি তিনি।

বাছাইকৃত সংবাদ

No posts found.